মন্ত্রীর বেতন ভাতা
একজন মন্ত্রী মাসিক এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা বেতন পান। ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা এবং চিপ হুইপরাও সমান বেতন পান। একজন মন্ত্রী –
- দেড় হাজার টাকা দৈনিক ভাতা
- সাড়ে ৭ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা
- সাড়ে ৭ লাখ টাকা স্বেচ্ছাধীন তহবিল
- মোবাইল ফোন কেনার জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান
- বিনা ভাড়ায় একটি সরকারি বাসভবন
- সরকারি খরচে একটি গাড়ি
- সরকারি খরচে রেল ভ্রমণ ও বিদেশ ভ্রমণ
শুধু তাই নয় বাইশ ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন সহ যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বহন করে সরকার। আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ থাকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। কোন মন্ত্রী যদি সরকারি বাসায় না থাকেন তাহলে ৮০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া পেয়ে থাকেন। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও টেলিফোন সহ সব ধরনের সেবা খাতের বিলও পেয়ে থাকেন।
শুধু নিজের কিংবা পরিবারের জন্য নয়, এলাকার মানুষের জন্য নানা ধরনের বরাদ্দ পেয়ে থাকেন মন্ত্রীরা। মসজিদ, মন্দিরের উন্নয়ন সহ এলাকার দাতব্য কাজের জন্য বছরে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয় তাদের। যার মধ্যে একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দিতে পারেন। নির্বাচন এলাকায় সাক্ষাৎ প্রার্থীদের আপ্যায়নের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান মন্ত্রীরা।
ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব, সরকারি একান্ত সচিব এবং সরকারি কর্মচারীদের বাইরে আরেকজন সহকারী একান্ত সচিব পান মন্ত্রীরা। এছাড়াও দুজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আর্দালি, দুজন অফিস সহায়ক এবং একজন পাঠকের সুবিধা পান মন্ত্রীরা।
প্রতিমন্ত্রীর বেতন ভাতা
একজন প্রতিমন্ত্রী প্রতি মাসে বেতন পান ৯২ হাজার টাকা। এছাড়া –
- দৈনিক দেড় হাজার টাকা ভাতা
- সাড়ে সাত হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা
- সাড়ে ৭ লাখ টাকা স্বেচ্ছাধীন তহবিল
- মোবাইল ফোন কেনার জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান
- বিনা ভাড়ায় একটি বাসভবন পান
প্রতিমন্ত্রীরা ইউটিলিটি বিল সরকার বহন করে আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য সর্বোচ্চ তারা চার লাখ টাকা বরাদ্দ পান। সরকারি বাসায় না থাকলে বাড়িভাড়া পান ৭০ হাজার টাকা। সাথে যুক্ত হয় ইউটিলিটি বিলও। এলাকার মানুষের দাতব্য কাজের জন্য বছরে ৭ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার মধ্যে একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৩৫০০ টাকা দিতে পারেন।
নির্বাচনী এলাকার সাক্ষাৎ প্রার্থীদের আপ্যায়নের জন্য মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা পেয়ে থাকেন প্রতিমন্ত্রীরা। বিমান ভ্রমণের জন্য ৮ লাখ টাকার বিনা সুবিধা পেয়ে থাকেন তারা এবং একটি করে গাড়ি পান প্রতিমন্ত্রীরা। এছাড়া পরিবহন এবং ব্যক্তিগত সরকারের ক্ষেত্রে মন্ত্রীদের মতো একই সুবিধা পেয়ে থাকে প্রতিমন্ত্রীরা।
উপমন্ত্রীর বেতন ভাতা
উপমন্ত্রীদের মাসিক বেতন ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া –
- দৈনিক দেড় হাজার টাকা ভাতা
- ৫০০০ টাকা নিয়ামক ভাতা
- সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা স্বেচ্ছাধীন তহবিল
- মোবাইল ফোন কেনার জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান
উপমন্ত্রীকেও সরকারি বাসভবনের ভাড়া কিংবা ইউটিলিটি বিল দিতে হয় না। তাদের বাড়িভাড়া ও আসবাব খরচ প্রতিমন্ত্রীদের সমপরিমাণ। এলাকার মানুষের দাতব্য কাজে একজন উপমন্ত্রীকে বছরে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। উপমন্ত্রী চাইলে এই টাকার মধ্যে একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা দিতে পারেন। নির্বাচনী এলাকার মানুষদের আপ্যায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন তারা।
উপমন্ত্রীরা সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব এবং ক্যাডারের বাইরে থেকে আরেকজন সহকারী একান্ত সচিব পান। এছাড়া একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন জমাদার ও একজন আর্দালি, একজন অফিস সহায়ক ও একজন পাঠক বা পিয়নের সুবিধা পান তারা। আইন অনুযায়ী একজন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী উপমন্ত্রীর আয় এর ওপরে কোন কর নেই। এছাড়া নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করলে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরের তিন মাসের বাড়ি ভাড়ার সমপরিমাণ টাকা পাবেন তারা।
সংসদ সদস্যদের বেতন ভাতা
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্যের বেতন মাসে ৫৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতি মাসে নির্বাচনী এলাকায় যাওয়া আসার জন্য সাড়ে বারো হাজার টাকা ভাতা, ৫০০০ টাকার সম্মানী বা আপ্যায়ন ভাতা, ৭০ হাজার টাকা যাতায়াত খরচ এবং ১৫ হাজার টাকা অফিস খরচ পান তারা। সব টাকা করমুক্ত থাকে। সংসদ সদস্য ও তার পরিবারের চিকিৎসার খরচ প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার সমান। এছাড়াও সরকারের কাছ থেকে প্লট ও গাড়ি আমদানি সুবিধা পেয়ে থাকেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেতন মাসে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া তিনি মাসিক বাড়ি ভাড়া পান ১ লাখ টাকা। দৈনিক ভাতা ৩০০০ টাকা বরাদ্দ করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা কর্মচারী সুবিধা ও প্রদান করে থাকেন রাষ্ট্র সভাপতি।