শবে মেরাজ কি?
কখন হয়েছিল শবে মেরাজ?
মেরাজের এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি কোন তারিখে সংঘটিত হয়েছে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কোনো কোনো ঐতিহাসিকদের মতে রাসুল (সাঃ) নবুয়তের পঞ্চম বছর এই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। আবার কারো কারো মতে নবুয়তের ষষ্ঠ বছরে। তবে হাদিসের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা ও অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের প্রসিদ্ধ মতামত হলো পবিত্র এই ঘটনা রাসুল (সাঃ) নবুয়তের পঞ্চম বছর রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে সংঘটিত হয়েছে।
শবে মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল কেন?
মেরাজের ঘটনা রাসুল (সাঃ) জীবনের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য মন্ডিত বিষয়। রাসুল (সাঃ) এর আগে অন্য কোনো নবী রাসূলের জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি। মহান আল্লাহ তায়ালা এই রাতে তার সংস্পর্শ শুভ্রতার উপহার হিসেবে উম্মত মোহাম্মদকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান দান করেছেন। তাই রাসুল (সাঃ) নামাজের ব্যাপারে বলেছেন “নামাজ হলো মুমিনের মেরাজ।”
শবে মেরাজ ও নফল নামাজ
অনেক মুসলিম ভাই ও বোনেরা শবে মেরাজ উপলক্ষে কেউ ১২ রাকাত, কেউ ২০ রাকাত নামাজ আদায় করে থাকেন। ইসলামী শরীয়তে শবে মিরাজের নামাজ বলে কিছু নেই। নফল নামাজ পড়া সওয়াবের কাজ কিন্তু শবে মেরাজ উপলক্ষে নফল নামাজ আদায় করার কোনো ভিত্তি ও প্রমাণ হিসেবে কোথাও নেই।
কাজেই শবে মেরাজের নামে নফল নামাজ আদায় করা এবং এর ব্যবস্থা প্রবর্তন করা মানে ইসলামী শরীয়তে নিজের পক্ষ থেকে কিছু সংযোজন করা। আর এ ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে আমাদের ধর্মে এমন কিছু সংযুক্ত বা উদ্বোধন করবে, যা তার শরীয়তের অংশ নয়- তা প্রত্যাখ্যান হবে। বোখারি, ১/৩৭১
শবে মেরাজ ও নফল রোজা
কোরআন হাদিসের কোথাও বর্ণিত নেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার অনুসারীরা এই দিনের বিশেষভাবে কোন রোজা রেখেছেন এমনে কোন বর্ণনা ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না তাই এই দিনে সবাই মিরাজ উপলক্ষে রোজা রাখা কোন ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।
শবে মেরাজ রাতের ফজিলত
করনীয়-বর্জনীয়
- শবে মেরাজের নামাজ বলে কোনো নফল নামাজ আদায় না করা
- শবে মেরাজের রোজা নামে কোনো নফল রোজা না রাখা
- রজবের ২৯ ও ৩০ তারিখে সাবানের চাঁদ দেখার চেষ্টা করা
- ইসলামী শরীয়ত পরিপন্থী যেকোনো ধরনের আমল ইবাদত ও বিদআত থেকে বিরত থাকা
- প্রচলিত সব ধরনের প্রথা ও বিদআত বর্জন করা
শেষ কথা
কোনো কোনো এলাকায় খুব ধুমধাম এর সাথে শবে মেরাজ পালন করা হয়। শবে মেরাজ শবে বরাত ও শবে কদরের মতো বরকতময় মনে করা হয় এবং এই রাতে বিশেষভাবে মেরাজের নামাজ আদায় করা হয়। আর পরের দিন শবে মেরাজের রোজা রাখা হয়। ইসলামী শরীয়তে এসব আমলের কোন ভিত্তি নেই। কোরআন হাদিসে এর কোন সমর্থন পাওয়া যায় না। সুতরাং শবে মেরাজকে শবে বরাত বা শবে কদরের মতো মনে করা এবং উদযাপন করা সম্পূর্ণ বিদআত।