Icon of the Seas: যাত্রা শুরু করেছে পৃথিবীর বৃহত্তম জাহাজ ‘আইকন অফ দ্যা সিস’

দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যাত্রা শুরু করলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজ আইকন অফ দ্য সিস। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামি থেকে যাত্রা শুরু করেছে জাহাজটি। গন্তব্য হলো পূর্ব ও পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। যাত্রা শুরুর পর যাত্রীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির প্রস্তুতকারক কোম্পানি রয়েল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল সংস্থাটি।

বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও বিলাসবহুল এই জাহাজে যাত্রা নিয়ে উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। টাইটানিকের মতো হাজার হাজার মানুষ এই বিখ্যাত জাহাজের প্রথম সফরে সাক্ষী হতে চেয়েছেন। চলন্ত অবস্থায় এই জাহাজ দেখলে মনে হবে সাগরের বুকে এক ভাসমান শহর।

কোথায় তৈরি হয় জাহাজটি?

২০২২ এর এপ্রিলে ফিনল্যান্ডের মিয়ার তুর্কু শিপইয়ার্ডে জাহাজটির তৈরি হয়েছিল। গত বছরের শেষের দিকে সম্প্রতি সেখানে এটির ট্রায়াল রান হয়। ট্রায়াল রানে কয়েকশ মাইল পথ ভ্রমণ করেছে এই জাহাজটি। পরীক্ষামূলক সফরের সময় জাহাজটিতে চার দিন ধরে ইঞ্জিন, প্রযুক্তি, কম্পন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন ৪৫০ জন বিশেষজ্ঞ।

আইকন অফ দ্যা সিসের বৈশিষ্ট্য

এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ ছিল “ওয়ান্ডার অফ দ্যা সিস”। জাহাজটি ছিল ১১৮৮ ফুট দীর্ঘ এবং ওজোন ছিল ২৩৫, ৬০০ টন। তার থেকে আয়তনে ৬ শতাংশ বড় আইকন অফ দা সিস। আইকন অফ দা সিসের দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার (১,১৯৭ ফুট) এবং ওজোন ২,৫০,৮০০ টন। দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয় নির্মিত এই জাহাজটি টাইটানিকের চেয়েও ৫গুণ বড়।
২০ তলা এই জাহাজটি তে ২৮ ধরনের বিভিন্ন কেবিন থাকবে, ৮২ শতাংশ ঘরেই তিন বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ থাকতে পারবেন, ৭০ শতাংশ ঘরে থাকছে বারান্দা। সাত রাতের প্রথম যাত্রায় বারান্দার সহ একটি রুমের জনপ্রতি ভাড়া প্রায় ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিচালনায় থাকবেন দুই হাজারের বেশি সুদক্ষ নাবিক।

কি কি সুবিধা রয়েছে এই জাহাজে

বিলাসিতার চোখ ধাঁধানো ঝলক রয়েছে এ জাহাজটিতে। সব ধরনের পরিবহনই এই জাহাজ যাত্রা উপভোগ করতে পারবে। আরাম করা বা রোমান্স উপভোগ সবটাই হবে সেখানে। এছাড়াও জাহাজে যুক্ত হয়েছে বিনোদনমূলক নানান ব্যবস্থা। যাত্রীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে ৫০ জন সংগীত শিল্পী এবং কমেডিয়ান। এটি প্রথম তরলিক কৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ফুয়েল সেল প্রযুক্তি দ্বারা চালিত জাহাজ।

সবথেকে বড় আকর্ষণ ওয়াটার স্লাইড

আইকন অফ দ্যা সিসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর ওয়াটার পার্ক। যেখানে রয়েছে ছয়টি ওয়াটার স্লাইড। তার পাশাপাশি রয়েছে সাতটি সুইমিং পুল এবং নয়টি বিশেষ ধরনের পুল যার মধ্যে ঘূর্ণন আবর্তন চলবে। রয়েছে খেলার জায়গা, বাস্কেটবল কোর্ট, সার্ফ সিমুলেটর, জিপ লাইন, থিয়েটার সহ সব রকম বিনোদন ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে জাহাজটিতে বিনোদনের ৪০ টির ও বেশি উপায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন রয়েল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল সংস্থাটি।

সুবিশাল এই জাহাজে ভ্রমণের জন্য মাথাপিছু খরচ হবে ডলারে ১ হাজার ৭০৩ যা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭০৭ টাকা। জাহাজটিতে পর্যটকদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই রয়েছে। বিশ্বের এই বৃহত্তম জাহাজটিতে ব্যবহৃত হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। আয়তনে চারটি ফুটবল মাঠের সমান এই জাহাজ।