দ্রুত ওজন কমানোর জন্য ১০টি উপায় জেনে নিন

আমরা সবাই আমাদের শরীরকে ফিট রাখতে পছন্দ করি। কিন্তু ফিট না রাখতে পারার সব থেকে বড় বাধা হলো আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন। ওজন বৃদ্ধির সাথে আমাদের শরীরে শুধু সৌন্দর্যই নষ্ট হয় না এর সাথে নানা রকম রোগের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের সবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

অতিরিক্ত ওজনের ফলে আমাদের শরীরে নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির মূল কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন যাপন। অনেকে নানা রকম ভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। কেউ ডায়েট করে, কেউ কম খাবার খেয়ে, আবার কেউবা ব্যায়াম করে। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং পদক্ষেপ অনুসরণ করে চলতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে ঔষধি গাছের গুনাগুন

১.আমিষযুক্ত খাবার গ্রহণ

ওজন কমানোর একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে প্রতিদিন আপনাকে অবশ্যই আমিষযুক্ত খাবার খেতে হবে। আমিষযুক্ত খাবার খেলে অল্প খাবারে খুব তাড়াতাড়ি তৃপ্তি আসে এবং ক্ষুধা নিবারণ হয়। কারণ আমিষযুক্ত খাবার হজম হয়ে দেরি করে। যার ফলে আমাদের পাকস্থলীতে দীর্ঘ সময় খাবার অবস্থান করে। তাই আমাদের হঠাৎ ক্ষুধার তীব্র অনুভূতি কমিয়ে দেয়।

২.চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার

চর্বিযুক্ত খাবার আপনার শরীরের বাড়তি মেদ বা ওজন বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। চর্বিযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে কোমল পানীয়, বাদাম জাতীয় খাবার, তেল জাতীয় খাবার, বিভিন্ন ফাস্টফুড ইত্যাদি। এগুলো আমাদের শরীরে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাট হিসেবে জমা হয়। তাই যাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন বা মেদ রয়েছে তাদেরকে এসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

৩.সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে

সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এবং পুষ্টিতে ভরপুর। বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খাওয়ার ফলে আপনার শরীর স্বাস্থ্যকর থাকবে। এছাড়া সবুজ শাকসবজিতে কম ক্যালরি থাকে। এতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। কম ক্যালরিযুক্ত শাকসবজির মধ্যে অন্যতম হলো শাক, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শসা ইত্যাদি। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এই শাক সবজিগুলো রাখা প্রয়োজন।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, বেশি করে ফলগুলো ও শাকসবজি খেলে ওজন কমে। এর কারণ হলো শাকসবজি এবং ফলগুলিতে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে। যা হজম কমিয়ে পেটের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। ফাইবার গুলি হজম হতে সময় নেয় তাই ব্যাক্তিদের কিছু সময়ের জন্য পেট পূর্ণ মনে করেন।

৪.পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

ওজোন কমানোর জন্য প্রতিদিন খাওয়ার আগে খালি পেটে পানি পান করা খুবই জরুরী। পানি ১-১.৫ ঘন্টার মধ্যে ২৪-৩০% হজমশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। সাবমেড সেন্ট্রাল এর একটি গবেষণা অনুসারে, যারা খাবারের আধাঘন্টা আগে 0.5 লিটার পানি পান করেন তাদের ওজন ৪৪% বেশি কমে যায়।

৫.গ্রিন টি পান করা

ব্ল্যাক কফির মত গ্রিন টি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। গ্রিন টি তে ক্যাফিন এর মাত্রা কম থাকে। কিন্তু ক্যাটেইন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর থাকে। এই এন্টি অক্সিডেন্ট গুলি ক্যাফেইনের সাথে এক হয়ে কাজ করে এবং চর্বি বার করা বাড়িয়ে দেয়। গ্রিন টি দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে খুব জনপ্রিয়। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে এক কাপ গ্রিন টি পান করেন তাহলে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।

৬.নিয়মিত হাঁটাচলা করতে হবে

আমাদের ওজন বেড়ে যাওয়া অনেক বড় একটি কারণ হচ্ছে আমরা সবসময় বসে থাকি। অর্থাৎ ভালোমতো হাঁটাচলা করি না। আপনারা যদি ঘরে বসে থাকেন এবং হাঁটার সময় না পান তবুও সময় বের করে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটবেন। এই হাঁটার কাজটা সকালে করলে খুব ভালো হয়। যদি আপনি নিজে পরিশ্রম না করেন তাহলে আপনার শরীরের ভেতর অনেক চর্বি জমে যাবে যেগুলো আপনার ওজন খুব দ্রুত আরো বাড়িয়ে দিবে।

৭.নিয়মিত ব্যায়াম করা

ওজন কমাতে হলে ডায়েট যেমনপরিবর্তন আনতে হবে ঠিক তেমনি আপনাকে অবশ্যই কিছু ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করলে শুধু ওজন কমেই না এটি আমাদের শরীর অনেকটা সুস্থ থাকে এবং রোগবালা দূর হয়। সকালে উঠে হাটা একটি ভাল ব্যায়াম। এছাড়া আপনি যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। যেমন দৌড়, ভার উত্তোলন, স্কোয়ার্ড, রোয়িং, হ্যামকার্ল ইত্যাদি।

এছাড়া আপনি এরোবিক ব্যায়ামও বেছে নিতে পারেন। অ্যারোবিক ব্যায়াম মেটাবলিজম বাড়ায় এবং বেশি ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি পেটের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে, ওজন কমাতে সাহায্য করা ছাড়াও এরোবিক ব্যায়াম শক্তি বাড়াতে, রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে, শরীরের চর্বি কমাতে, ঘুমের উন্নতি করতে এবং বেশি সহনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৮.ওজন কমাতে ঘুমের ভূমিকা

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা হলো দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক 6 থেকে 8 ঘন্টা গভীর ঘুমের প্রয়োজন। এর বেশি ও শরীরের জন্য ভালো না কম ও শরীরের জন্য খারাপ। তাই দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই ভালো ডায়েট এবং ব্যায়ামের পাশাপাশি ভালো ঘুমের ওপর জোর দিতে হবে। এছাড়া রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে আপনাকে রাতের খাবার শেষ করতে হবে।

৯. ফাস্টফুড থেকে দূরে থাকতে হবে

আমরা মূলত বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এর খাবারে বিভিন্ন ফাস্টফুডের দিকে খুবই আসক্ত। এসব খাবার দেখলে আমরা ঠিক থাকতে পারি না। কিন্তু এ সকল খাবার আমাদের শরীরের জন্য যেমন খারাপ তেমনি শরীরের মেদ অনেকটা বাড়িয়ে আপনাকে মোটা বানিয়ে ফেলবে। মনে রাখতে হবে একবার বেশি মোটা হয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরত আসা খুবই কষ্টসাধ্য কাজ। তাই প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধে উত্তম।

১০.যে সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে

স্বাস্থ্যকর ও দীর্ঘস্থায়ীভাবে ওজন কমাতে ডায়েট হতে কিছু খাবার বাদ দিতে হবে। এগুলো হলোঃ

  • চিনিযুক্ত পানীয়
  • পেস্ট্রি
  • কুকিজ এবং কেক
  • ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং চিপস
  • নির্দিষ্ট ধরনের অ্যালকোহল
  • উচ্চ ক্যালোরি কফি পানীয়
  • চিনিযুক্ত খাবার
  • সাদা ভাত (অল্প পরিমাণে খাওয়া যাবে)
  • মিষ্টি দই
  • প্রক্রিয়াজাত মাংস
  • মিশ্রিযুক্ত শুকনো ফল

শেষ কথা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ছিল কিভাবে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমানো যায়। এ সম্পর্কে আপনাদের সাথে দশটি টিপস শেয়ার করেছি। এ অভ্যাসগুলো আপনার ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। এছাড়াও আপনাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে অনেক সময় আমাদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যায়।উপরের নিয়ম গুলো ঠিকভাবে মেনে চললে আশা করি ভালো ফল পাবেন।

শীতকালে শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন?

শীতকালে প্রায় অনেকেই শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের নানা রকম সমস্যায় ভুগেন। ত্বক খসখস করে টানটান ভাব লাগে ঠোঁট ফেটে যায় এই নানা রকম সমস্যার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানবো। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতকালে শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন।

শীতের আগমনের এই সময়টাতে ত্বক থাকে খুবই রুক্ষ ও শুষ্ক। বাইরের ধুলোবালি, শীতল আবহাওয়া ও আদ্র পরিবেশের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়ের ত্বক এ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তাই শীতের এই সময়টাতে আপনার ত্বক সজীব ও কোমল রাখতে দরকার একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা।

শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন

শীতকালে আমাদের ত্বকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা বেড়ে যায়। আমরা অনেকেই নানা ব্যস্ততার কারণে এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য পার্লারে যেতে পারি না। কিন্তু ঘরে বসেই মাত্র কয়েকটি উপকরণ ব্যবহারের ফলেই আমাদের ত্বকে শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করতে পারি। চলুন জেনে নেই সেই উপকরণগুলো কি কি –

অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল সাধারণ সব ত্বকের জন্য কার্যকর। এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শুধু আপনার মুখ নয়, পুরো শরীরের ত্বকের যত্ন নেই। গোসলের আগে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করে নিলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়।
দুধ ও দইঃ শুষ্ক বা ফাটা ত্বকে অনেক সময় জ্বালা পোড়া বা চুলকানির মত সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক লিটার ঠান্ডা দুধে নরম কাপড় বা তুলা ভিজিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। পাঁচ মিনিট এইভাবে ব্যবহার করলে ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর হয়। দুধ ও দই এ উপস্থিত ল্যাক্টিক এসিডের প্রভাবে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হবে।
অ্যালোভেরাঃ এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকে পড়বে সুরক্ষার আবরণ। বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে এলোভেরা ব্যবহার করা বিশেষ প্রয়োজন।
মধু ও পাকা কলাঃ মধু ও পাকা কলা একসঙ্গে ব্লেন্ডার করে প্রলেপ এর মতো করে মুখে লাগাতে হবে। তারপর 10 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর হয়ে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে নরম ও কোমল।

আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ফেসপ্যাক তৈরি করবেন 

শুষ্ক ত্বকে যে উপকরণ গুলো ব্যবহার করা উচিত নয়

শুষ্ক ত্বকের জন্য কয়েকটি উপকরণ রয়েছে যেগুলো শীতকালীন সময়ে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এই উপকরণগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা বেড়ে যায়। চলুন জেনে নিই সেই উপকরণগুলো কি কি –

বেসনঃ বেসনের সাথে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে ফেসপ্যাক, ফেস মাস্ক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই শীতের সময় আমাদের বেসন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। কারণ আমরা যখন বেসন ব্যবহার করি তখন আমাদের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়, মশ্চারাইজার কমে যায়, যার ফলে আমাদের ত্বকের শুষ্কতা আরো বেড়ে যায়। তাই শীতের সময় বেসন ব্যবহার করা উচিত নয়।
চালের গুড়াঃ এই শীতকালীন সময়ে আপনাকে চালের গুড়া ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। চালের গুড়ায় প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ রয়েছে। এই স্টার্চ আমাদের ত্বককে শুকিয়ে যেতে সাহায্য কর। চালের গুড়া ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শীতকালে চালের গুড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।
এছাড়া আলু, লেবুর, রস এসব ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। এসব উপকরণ ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে দেয়। এই কয়েকটা জিনিস যদি আপনি শীতের সময় বাদ রাখেন তাহলে খুব ভালোভাবে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়।

শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো

শুষ্ক ত্বকের জন্য Himalaya Moisturizing Aloe vera ফেসওয়াস টি খুবই ভালো। যেহেতু এটি ভিটামিন ই, অ্যালোভেরা ও শসা দিয়ে তৈরি তাই ত্বকের জন্য এই ফেসওয়াস টি খুব ভালো। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক অনেক নরম হবে এবং শুষ্কতা দূর করে। এই ফেসওয়াশ টির দাম মাত্র 120 টাকা।

শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন ক্রিম ভালো

Nivea soft Moisturizing ক্রিমটি শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো। এটি আপনার ত্বকে পর্যাপ্ত মশ্চারাইজার সরবরাহ করে আপনার ত্বককে রাখবে প্রাণবন্ত উজ্জ্বল। এই ক্রিমটি ভিটামিন ই ও জোজবা ওয়েল সমৃদ্ধ সফট ক্রিম। এই ক্রিমটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং দিনেও রাতে যে কোন সময় ব্যবহার করা যায়।

উপসংহার

শীতকালে আমাদের ত্বকের একটু বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এই সময় ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। সেইসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।

কক্সবাজারের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে নিন

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হলো কক্সবাজার। পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। এই ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের বিশেষত্ব হলো পুরো সৈকতটি বালুকাময়, কর্দমাক্ত নয়।কক্সবাজারের যেসব দর্শনীয় স্থানসমূহ না গেলে আপনার ভ্রমণটাই বৃথা হয়ে যাবে। এক নজরে জেনে নিন কক্সবাজারের কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য

কক্সবাজার বালুকাময় সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন অত্যাধুনিক হোটেল, কটেজ এবং নতুন সাজে সজ্জিত মার্কেট সহ শামুক ঝিনুক ও নানা প্রজাতির প্রবাল সংগ্রহে পর্যটন মৌসুমে পর্যটকের ভিড় থাকে এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একটি মায়াবী ও অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এখানে রয়েছে ওয়াটার বাইকিং বিচ বাইকিং, ফিউচার পার্ক, শিশু পার্ক, ইকোপার্ক এবং ফটোশুট স্পট রয়েছে।

কক্সবাজার লাবনী বীচ

কক্সবাজার পুরাতন সমুদ্র সৈকত যা লাবনী পয়েন্ট বা পুরাতন সমুদ্র সৈকত নামের পরিচিত। যা কক্সবাজার কলাতলীতে অবস্থিত। সকল সমুদ্র প্রেমী ছুটে যায় কক্সবাজারের এই সি বিচ টিতে। কক্সবাজার শহরের নিকটবর্তী হওয়ায় লাবনী সমুদ্র সৈকতকে কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় ছোট বড় অনেক দোকান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এছাড়াও পর্যটকদের জন্য এখানে একটি ঝিনুকের মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছে। মায়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য সীমান্তবর্তী দেশগুলোই পাহাড়ি সব পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে এই মার্কেটটি।

ইনানী সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবিরাম সৌন্দর্য ভরপুর আকর্ষণীয় ও নয়না বিরাম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে এই ইনানী সমুদ্র সৈকত। পশ্চিমে সমুদ্র সৈকত আর পূর্বে পাহাড়ের এক অপূর্ব মিলন মেলা জায়গাটিকে করেছে বড়ই বৈচিত্র্যময়। ইনানী সমুদ্র সৈকত প্রবাল প্রাচীর দ্বারা পরিপূর্ণ, অনেকটা সেন্ট মার্টিন এর মতো।

এই সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন খাবারের রেস্তোরাসহ আরো অনেক পর্যটন সুবিধা রয়েছে। সকাল সন্ধ্যা প্রায় সব সময় রয়েছে শুটকি মাছের নানা ধরনের খাবার। বিভিন্ন বয়সের মানুষ এখানে আসে সমুদ্রে গোসল করতে ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। ইনানী খুবই শান্ত সমুদ্র সৈকত। প্রবাল পাথর ইনানী সমুদ্র সৈকতের প্রধান আকর্ষণ।

হিমছড়ি সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি। হিমছড়ির এক প্রান্তে রয়েছে সবুজ হলুদ রাশির বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত আর অন্য প্রান্তে রয়েছে সারি সারি সবুজ পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে বয়ে চলেছে অপরূপ সুন্দর এক হিমশীতল জলপ্রপাত, যা কিনা এখানকার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।

পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি। পাহাড়ের উপর থেকে চোখে পড়ে দূর থেকে ভেসে আসা নীল জল রাশির ঢেউগুলো যেন আছড়ে পড়ছে সৈকতের উপরে, সে এক অন্যরকম অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অনেক পর্যটক পায়ে হেটে এই সৌন্দর্য উপভোগ করে।

মহেশখালী পাহাড়ি দ্বীপ

দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী দ্বীপ। কক্সবাজার থেকে মহেশখালী মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যে দ্বীপে রয়েছে ঘন বন জঙ্গল যার বেশিরভাগই হচ্ছে সুন্দরবনের মতো ম্যানগ্রোভ জাতীয়। তাছাড়া দ্বীপের মূল বৈশিষ্ট্য হল চারিদিকে পানি আর মাঝখানে ছোট বড় অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়।

মহেশখালীর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম সোনাদিয়া দ্বীপ, আদিনাথ মন্দির, বদ্ধ মন্দির, রাখাইন পাড়া, স্বর্ণমন্দির, মৈনাক পর্বত, শুটিং ব্রিজ অন্যতম। মহেশখালী দ্বীপ শুটকি চিংড়ি লবণ ও মুক্তার উৎপাদনের জন্য সুনাম অর্জন করলেও এখানকার বিখ্যাত হল মিষ্টি পান।

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড

কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় বিনোদনের এক নতুন সংযোগ এই ফিস মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে সাগর ও মিঠা পানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ রয়েছে বিরল প্রজাতির কিছু মাছ সহ হাঙ্গর, পিরানহা, শাপলা পাতা, পান পাতা, সামুদ্রিক শৈবাল সহ নানা প্রজাতির মাছ। এখানে এলে কিভাবে এক নিমেষে সময় কেটে যাবে তা বুঝতেই পারবেন না।

শতাধিক ছোট বড় একুরিয়ামে সাজানো হয়েছে দর্শনীয় অত্যাধুনিক শিল্পকর্মটি। এ যেন সমুদ্রের নিচে এক মাছের জগত। এই ফিস একুরিয়ামটি সম্পূর্ণরূপে ঘুরে দেখতে প্রায় দুই ঘন্টার মত সময় লাগবে। একুরিয়ামটির ভিতর প্রবেশ করলে মনে হবে যেন সাগরের নিচে রয়েছে আর চারিপাশে বিচরণ করছে নানা প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এই দ্বীপ টি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ। টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিয়ানমার উপকূল থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে কক্সবাজার জেলার নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত।

প্রচুর পরিমাণে নারিকেল গাছ থাকায় স্থানীয়ভাবে এটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত। প্রতিকূল আবহাওয়ায় দারুচিনি বহনকারী একটি জাহাজ চরের নিচে একটি বিশাল পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে বিধ্বস্ত হওয়া যার ফলে দারুচিনি পুরোদীপের ছড়িয়ে পড়ে পড়ে পরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নাম হয়ে যায় দারুচিনি দ্বীপ।

শেষ কথা

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের এক অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ তার রূপ বদলায় এবং পর্যটকদের বিমোহিত করে। শীত বর্ষা বসন্ত বা গ্রীষ্মের মত কোন ঋতু নেই যখন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য বদলাই না। পাখির মতো শূন্যে ভেসে দুহাত প্রসারিত করে সাগর আর পাহাড়ের বুকে হারিয়ে যাওয়াটা যেন জীবনের এক অরণ্য অনুভূতি।

যখন সূর্য পূর্ব দিক থেকে উদিত হয় তখন মনে হয় রক্তিম গোলাকার পৃথিবী যেন সমুদ্রের বুক চিরে বেরিয়ে এসে আমন্ত্রণ জানায় একটি নতুন দিনের।আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হন তাহলে জীবনে একবার হলেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করে যাবেন। আপনার যদি এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত মানুষের সাথে শেয়ার করবেন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও সময়-সূচি

নামজ শব্দের অর্থ হলো শুভকামনা, পবিত্রতা , ক্ষমা পার্থনা । মুসলিমদের জীবনে নামাজের গুরুত্ব অপরিহার্য । আল্লাহ তায়ালা বলেছেন , নিঃসন্দেহে সালাত বিশ্বাসীদের ওপর সময়ের সাথে সম্পৃক্ত করে আবশ্যকীয় করা হয়েছে।( সূরা নিসা, আয়াত – ১০৩ )

নামাজ পড়লে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। সুন্দর জীবনযাপন করার জন্য এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজের গুরুত্ব ও সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার গুরুত্ব

নামাজ বেহেশতের চাবিকাঠি। ইসলামের ফরজ ইবাদাতগুলোর মধ্যে নামাজ একটি। নামাজ পড়া ছাড়া কোনো ব্যক্তি মুমিন হতে পারে না। নামাজ সব সময় মানুষকে ভালো পথ দেখায়। রাসূল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করে না, ইসলামে তার কোনো অংশ নাই। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে নামাজ ত্যাগ করে সে জাহান্নামি” । নামাজ মানবজীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে।  নামাজ মানুষকে খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে, মিথ্যে বলা থেকে বিরত রাখে। মানবজীবনে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম।

নামাজ কয় রাকাত ও কি কি

নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত। ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব, এশা। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ফরজ।
ফজরের নামাজ ৪ রাকাত
২ রাকাত সুন্নত
২ রাকাত ফরজ
যোহরের নামাজ ১২ রাকাত
৪ রাকাত সুন্নত
৪ রাকাত ফরজ
২ রাকাত সুন্নত
২ রাকাত নফল
আছরের নামাজ ৬ রাকাত
৪ রাকাত ফরজ
২ রাকাত নফল
মাগরিবের নামাজ ৭ রাকাত
৩ রাকাত ফরজ
২ রাকাত সুন্নত
২ রাকাত নফল
এশার নামাজ ১১ রাকাত
৪ রাকাত ফরজ
২ রাকাত সুন্নত
২ রাকাত নফল
৩ রাকাত বেতের

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়-সূচি

ফজরের নামাজের সময় সূচি ঃ ফজর পাখি ডাকা ভরে কিছুটা আধার থাকতেই  অর্থাৎ সকালেরের আভা ছড়িয়ে পরার আগেই এই নামাজ আদায় করা ভালো ।তবে এই ক্ষেতে বিশেষে প্রয়োজনে সূর্যের উদীয়মান প্রথম অংশ পূর্ব দিগন্ত রেখা অতিক্রম করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নাওয়া যেতে পারে ।সূর্যদয়ের সময় নামাজ পোড়া নিষেধ।

যোহরের নামাজের সময় সূচি ঃ মধ্যাহ্ণে সূর্য তার সর্বচ্চ স্থান থেকে কিছুটা হেলে পড়ার পরই নামাজ আদায় করে নেওয়া ভালো। তবে সূর্য কিরণ যখন বেশ উত্তপ্ত থাকে বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে একটু দেরিতে অর্থাৎ সূর্যের তেজ কিছুটা কমে এলে নামাজ আদায় করে নেওয়ার কিছুটা অবকাশ রয়েছে।

আছরের নামাজের সময় সূচি ঃ সূর্য যখন পশ্চিম দিগন্ত রেখা থেকে বেশ কিছুটা উপরে অবস্থান করে এবং সূর্যের উজ্জ্বলতার তেজ বিরাজমান থাকে , সেই সময় থেকে সূর্যের সোনালি তামাটে বর্ণ মিটে গিয়ে রক্তিম বর্ণ ধারণ করার পূর্বেই নামাজ আদায় করে নেওয়া ভালো। সূর্যাস্তের সময় নামজ পড়া নিষেধ।

মাগরিবের নামাজের সময় সূচি ঃ সূর্য সম্পূর্ণ রূপে অস্ত যাবার পর কিছু সময় এর মধ্যেই নামাজ আদায় করে নেওয়া ভালো। তবে সূর্যাস্তের পর হতে যতক্ষণ পর্যন্ত নিক্ষিপ্ত কোনো তীরের পতিত হবার স্থান দৃষ্টিগোচর হয় অর্থাৎ গোধূলির রেশ বিরাজমান থাকা পর্যন্ত নামাজ আদায় করা যেতে পারে।

এশার নামাজের সময় সূচি ঃ গোধূলি পেরিয়ে রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে আসার পর হতে এই নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং রাতের এক তৃতীয়াংশ সময় থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত যে কোনো সময় নামাজ আদায় করে নেওয়া যেতে পারে।

নামাজের নিয়ম

নামাজ পড়ার আগে পবিত্র হওয়ার জন্য ওজু করতে হবে । তারপরে জায়নামাজে দাড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়তে হবে। নামাজের নিয়ত করে দুই হাত কান পর্যন্ত উঠাতে হবে। এরপরে তাকবীরে তাহারিমা পড়ার পর হাত বেঁধে সানা পড়তে হবে। তারপরে সূরা ফাতিহা অন্ন যেকোনো একটি সূরা পড়তে হবে।
অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে আঙুল গুলো ছড়িয়ে দিয়ে হাঁটু আঁকড়ে ধরতে হবে। রুকুতে ৩/৫/৭ বার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ পড়তে হবে। এবার রুকু থেকে উঠে ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ রাব্বানা লাকাল হামদ’ পড়তে হবে। এরপর তাকবির পড়ে সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় ৩/৫/৭ বার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়তে হয়। এভাবে ২ বার সিজদাহ করতে হবে ১ রাকাতে।
২ বার সিজদাহ করে দাড়িয়ে যেতে হবে । দ্বিতীয় রাকাত আগের মতোই কিন্তু সানা পড়া যাবে না। আগের মতোই সূরা পড়ে রুকু সিজদাহ করতে হবে। সিজদাহ শেষ করে ডান পা খাড়া করে এবং বাম পা জায়নামাজে বিছিয়ে বসতে হবে। অতঃপর তাসাহুদ পড়তে হবে। তাসাহুদের পর দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়তে হবে। দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে উভইদিকে সালাম ফেরাতে হবে। তারপর বিভিন্ন দোয়া ও ইস্তেগফার পড়ে মোনাজাত করতে হবে।
জন্ডিস কী – জন্ডিস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন
জন্ডিস বলতে সাধারণত লিভারের প্রদাহ জনিত রোগকে বোঝায়। হেপাটাইটিস ই, এ এবং বি ভাইরাসের কারণে জন্ডিস হয়ে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় জন্ডিস নিয়ে অবহেলা করলে পরবর্তীতে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই আমাদের সকলের উচিত জন্ডিস প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা জানবো জন্ডিস হলে আপনি কি খেতে পারবেন এবং পারবেন না। শুধু তাই নয় জন্ডিস হলে রোগীর ডায়েট কী রকম হওয়া উচিত সেই সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন। তাই চলুন, আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।

জন্ডিস এমন একটি রোগ যা প্রায় সব বয়সের মানুষদেরই হয়ে থাকে। জন্ডিস অনেকটা কলেরা বা ডায়রিয়ার মতো। যা আগে থেকে বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে বিকাশ লাভ করে। যদি সঠিক সময়ে জন্ডিস প্রতিকারের পদক্ষেপ নেওয়া যায় তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি সেরে যায়। তাই আমাদের সবার জেনে রাখা প্রয়োজন কিভাবে আমরা জন্ডিস থেকে বাঁচতে পারব।

জন্ডিস কি?

জন্ডিস কোন রোগ নয় রোগের লক্ষণ মাত্র। জন্ডিস শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ যোনিস থেকে যার অর্থ হলো হলদেটে। জন্ডিস হলে ত্বক ও চোখে সাদা অংশ এবং অন্যান্য মিউকাস জেলি হলুদ হয়ে যায়। মানবদেহের রক্তে লোহিত কণিকা গুলি স্বাভাবিক নিয়মে একটা সময় ভেঙে যায় যা পরবর্তী সময়ে লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিত্তরসের সঙ্গে মিশে পরিপাকতন্ত্রের প্রবেশ করে। এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কোন কারণে ব্যাহত হলে জন্ডিস দেখা দেয়।

জন্ডিস কেন হয়?

ভারত বাংলাদেশ সহ প্রায় সারা বিশ্বে জন্ডিসের প্রধান কারণ হলো হেপাটাইটিস ভাইরাস। আর উন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত মদ্যপান জন্ডিসের একটি কারণ। আমাদের দেশের জন্ডিসের প্রধান কারণ হলো হেপাটাইটিস ই এ এবং বি ভাইরাস। এর মধ্যে হেপাটাইটিস ই এবং এ হলো পানি ও খাদ্য বাহিত আর হেপাটাইটিস বি মূলত ছড়ায় রক্তের মাধ্যমে। তবে যেকোনো বয়সের মানুষই হেপাটাইটিস ই এবং বি ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
এছাড়া থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। লিভার কোষ, অগ্নাশয়, পিত্তনালী এবং যকৃতের ক্যান্সারের মত সমস্যাগুলিও জন্ডিসের কারণ হিসেবে পরিচিত। তবে লিভারের রোগই হলো জন্ডিসের প্রধান কারণ।

জন্ডিস রোগের লক্ষণ

  • চোখের সাদা অংশ এবং ইউরিন এর রং হলুদ হয়ে যায়
  • শারীরিক দুর্বলতা ও খিদে কমে যায়
  • জ্বর জ্বর অনুভূতি বা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা
  • বমি বমি ভাব
  • ওজন কমে যায়
  • শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি
  • মাথা ব্যথা ও জ্বর

জন্ডিস প্রতিকারে কার্যকরী যে ৭টি খাবার

একটি কথা মনে রাখবেন জন্ডিস কিন্তু শুধু ঔষধের সারানো সম্ভব নয়। জন্ডিসের আক্রান্ত রোগীদের খাওয়া দাওয়ার দিকে নজর দেওয়া খুব দরকার। ওষুধের পাশাপাশি এমন কিছু খাবার আছে যা জন্ডিস কমাতে সাহায্য করে। যেমন-
১.টমেটোঃ টমেটোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এবং এটি ভিটামিন সি তে পরিপূর্ণ। টমেটো জুস যদি অল্প পরিমাণে নুন দিয়ে খালি পেটে দশ থেকে বারো দিন খাওয়া যায় তাহলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া কাঁচা টমেটো বা সালাদ হিসেবে খেতে পারেন।

২.আমলকিঃ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। জন্ডিস কমানোর জন্য আমলকি খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। আমলকি যকৃতের কোষকে সক্রিয় করে তুলতে সাহায্য করে। তবে আমলকি কাঁচা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। শুকনো আমলকির চেয়ে কাঁচা আমলকি বেশি কার্যকরী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, আর এই ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৩.আখের রসঃ জন্ডিসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে আখের রস আপনার অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। প্রতিদিন নিয়ম করে এক গ্লাস আখের রস খেতে পারলে যকৃতের কার্যক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব। তাই আপনার লিভার সুস্থ রাখতে আপনি প্রতিদিন আখের রস খেতে পারেন। তবে রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া আখের রস একদম খাবেন না।

৪.লেবুর রসঃ লেবুতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। লেবু পিত্তনালী পরিষ্কার করে। খালি পেটে যদি পাতি লেবুর রস খান তাহলে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। এছাড়া হালকা গরম পানিতে লেবু এবং সামান্য পরিমাণে লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।

৫.গাজরঃ এতে প্রচুর পরিমাণে বিটা করোটিন আছে। এছাড়া ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে। বিটা ক্যারোটিন খারাপ কোলেস্টরেলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজর কিন্তু যকৃতের অবাধ কাজে সাহায্য করে থাকে। তাই অল্প পরিমাণে গাজর আপনার ডায়েট এ অবশ্যই রাখুন। এতে সুফল পাবেন।

৬.বেদেনাঃ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এমনকি এতে সোডিয়াম পাওয়া যায়। যা জন্ডিস কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত অল্প পরিমাণে আপনার ডায়েটে যোগ করতেই পারেন বেদেনা। এছাড়া বেদেনের রস জুস করে খেতে পারেন।

৭.কাঠবাদামঃ প্রতিদিন যদি দুই থেকে চারটি করে ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়া যায় তাহলে যকৃতের স্বাভাবিক কাজ অক্ষুন্ন রাখা সহজ হয়। কাঠবাদাম শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং শরীরে শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন: রোগ নিরাময়ে আদার উপকারিতা।

আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে কোন খাবারগুলো রাখতে পারবেন

জন্ডিস হলে রোগীর খাবার কি হবে তা নিয়ে অনেকের ভেতর অনেক বিভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। জন্ডিস হলে এমন খাবার খাওয়া উচিত যেন যকৃত ও পিত্তথলি ওপর কোনো চাপ না পরে। এর জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় কিছু শাকসবজি রাখতে পারি যেমন- মিষ্টি আলু, ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, লাল শাক, পুঁইশাক, পালং শাক ইত্যাদি জন্ডিস রোগীর জন্য খুবই ভালো অনেকে মনে করেন।

জন্ডিসের আক্রান্ত রোগীরা প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে পারবে না এটা আসলে ভুল ধারণা। খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন মাছ ডাল থাকতে হবে। তা না হলে কিন্তু রোগী দুর্বল হয়ে যাবে। তবে তেল ও মসলা কম পরিমাণে খেতে হবে, বেশি বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন- লেবু, লেবুর রস, টমেটো। জন্ডিসের আক্রান্ত রোগীর জন্য খুবই ভালো এগুলো। শরীরের পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এছাড়া প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে বাদাম খেতে পারেন, সামান্য আদা কুচি, রসুন কুচি, আদার রস, আদা চা খেতে পারেন দিনে দুই থেকে একবার করে। এগুলো যকৃতের জন্য খুবই উপকারী। ফলের মধ্যে পেঁপে, আনারস, তরমুজ, আম, কমলা, জলপাই, ডালিম, বেদেনা এবং আঙ্গুলের মত ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। ভিটামিন এ এবং ই জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে।

জন্ডিসের সময় কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়

  • কাঁচা লবণ
  • দুধ বা পনির
  • অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার
  • অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার
  • অতিরিক্তমসলাযুক্ত খাবার
  • অ্যালকোহল
  • ফ্যাট যুক্ত খাবার

জন্ডিস হলে যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে

জন্ডিস এমন একটি রোগ যার সঠিক সময় প্রতিকার না হলে পরবর্তীতে ভয়ানক আঁকার ধারণ করে। জন্ডিসে আক্রান্ত হলে রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। এছাড়া তরল জাতীয় খাবার এবং সহজে হজম হয় এই ধরনের খাবার খেতে হবে। এ সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জন্ডিস এর সময় সঠিক নিয়ম মেনে চললে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জন্ডিস সেরে যায়।

শেষ কথা

জন্ডিস নিয়ে বিভ্রান্তের কোনো কারণ নেই। জন্ডিস হলে আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগটি সারিয়ে তুলতে পারি। জন্ডিস যেহেতু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাই আমাদের অবশ্যই জন্ডিস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। জন্ডিস হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং সঠিক নিয়ম অনুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করবেন।। ধন্যবাদ।
ইয়েমেনের হুথিদের ওপর বিমান হামলা করলো আমেরিকা ও ব্রিটেন

গাজায় ইসরাইলি হামলার পর থেকে আলোচনায় হুতি বিদ্রোহীরা। লোহিত সাগরে একের পর এক পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালিয়ে পুরো বিশ্বে আতঙ্ক তৈরি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। গত তিন মাসে এই পথ দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে প্রায় ২৭ বার হামলা চালিয়েছে হুথিরা। কারা এই হুথি? আর কেনই বা তারা জড়ালো ইসরাইল হামাস যুদ্ধে?

ইয়েমেনের হুথিদের ওপর লক্ষ্য করে আমেরিকা ও ব্রিটেনের বিমান হামলায় কি ঘটলো এবং কোন দেশগুলো কি মন্তব্য করেছেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো এই আর্টিকেলটিতে। এই বিষয়ে জানতে হলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ইয়েমেনের হুদি বিদ্রোহীদের ওপর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। দুটি দেশই তাদের হামলাকারী বিমান উড়ে যাওয়ার চিত্র প্রকাশ করেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছে, তাদের মিশনে সমর্থন দিয়েছেন নেদারল্যান্ডস অস্ট্রেলিয়া কানাডা এবং বাহারাইন। ইয়েমেনের রাজধানী সানা সহ অনেক জায়গায় এ হামলা চালানো হয়েছে।

আমেরিকা ও ব্রিটেনকে চরম মূল্য দিতে হবে: হুথি

হুথিরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে হুশিয়ার করে বলেছে, এই নির্মম হামলার জন্য তাদেরকে চড়ামূল্য দিতে হবে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলা শুরুর পর থেকে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে লোহিত সাগরের বিভিন্ন জাহাজে ড্রোন এবং অস্ত্র হামলা চালাতে থাকে। আমেরিকা বলছে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭ টি জাহাজে হামলা করেছে হুথিরা।

অন্যদিকে হুথিরা দাবি করছে, তারা শুধু জাহাজে আক্রমণ করছে যেগুলোর সাথে ইসরাইলের সংযোগ রয়েছে। গত দুমাস ধরে চলতে থাকা হুথিদের এসব হামলা ঠেকাতে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। হুথিদের বেশ কয়েকবার কড়া হুমকি ও দিয়েছে তারা। যদিও কোন বারই লাভ হয়নি সেক্ষেত্রে।

রুট পরিবর্তন করেছে পণ্যবাহী জাহাজ

গত দু’মাস এ হুথিরা জাহাজে যে হামলা গুলো ঘটিয়েছে সেগুলো ঘটেছে ইয়েমেনের সাথে। লোহিত সাগরে পণ্য পরিবহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ। প্রতিদিন এই পথ দিয়ে ব্যাপক পরিমানে অপরিশোধিত তেল পরিবহন করা হয়। যা বিশ্বের মোট ব্যবহৃত জ্বালানির প্রায় বিশ শতাংশ।
হুথিদের হামলার ভয়ে বিশ্বের বড় বড় পণ্য পরিবহনকারী জাহাজ লোহিত সাগরের জাহাজ নিতে সাহস পাচ্ছে না সে পথ এড়াতে আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপ এলাকা দিয়ে সাড়ে তিন হাজার মাইল পথ বাড়তে ঘুরে যাহা চলাচল করছে এতে যাতায়াতের সময় কমপক্ষে ১০ দিন বেড়ে যাচ্ছে আর খরচ বাড়ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লাখ ডলার।

ইয়েমেনের সাবেক মার্কিন কর্মকর্তার মন্তব্য

হুথিদের থামানোর জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এমন হামলার মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন চলমান হামাস ইসরাইল যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে গেল বলে মন্তব্য করেন, ইয়েমেনের সাবেক মার্কিন উপরাষ্ট্র দূত নাবিল খুরি। সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিক আরো বলেন, আমেরিকা ও ব্রিটেন ভেবেছে হামলা চালিয়ে হুথিদের দমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু এখান থেকে বড় আকারে যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে বলে বার্তা দেন। তিনি এই হামলাকে “মার্কিন কূটনীতির ব্যর্থতা” বলে অভিহিত করেছেন।

হামলার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হুথি বিদ্রোহীরা জানান লোহিত সাগরকে সামরিক করনের দায়ে ওয়াশিংটন ও লন্ডন কেই দিতে হবে। এ হামলার পর থেকে হুথি, আরব ও মুসলিম বিশ্বের শত্রুদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে উল্লেখ করে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ও ব্রিটিশ ঘাটিগুলোতে হামলা করার ঘোষণা দেয়।

যে দেশগুলো এই হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে

ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস হুথি হামলার সমর্থন করলেও সমালোচনা করেছে রাশিয়া, সৌদি আরব ও ইরান। ইসরাইলের গণহত্যায় মদত অব্যাহত রেখে আমেরিকান ও ব্রিটেন ভিন্ন খাতে অবৈধ করতে এমন হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরান।

এমন হামলা এ অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা ছাড়া আর কোন পথ বয়ে আনবে না বলেও মন্তব্য করেন ইরান। এদিকে উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়ানোর আহবান জানিয়েছে সৌদি আরব। ওয়াশিংটন ও লন্ডনের যৌথ বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কো জানায়, হুথিদের ওপর যে কোন হামলা আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে।

এবারের ইয়েমেনে হামলার পর কি হতে পারে?

ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার জবাবে যত দ্রুত সম্ভব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়ে জরুরি সভা ডাকার আহ্বান জানিয়েছে মস্কো। এর আগে লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকে বসে সদস্য দেশগুলোদের নিয়ে। সে সময় হুথিদের হামলা বন্ধে উথাপীথ প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে রাশিয়া ও চীন।