শীতকালে শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন?

শীতকালে প্রায় অনেকেই শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের নানা রকম সমস্যায় ভুগেন। ত্বক খসখস করে টানটান ভাব লাগে ঠোঁট ফেটে যায় এই নানা রকম সমস্যার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানবো। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতকালে শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন।

শীতের আগমনের এই সময়টাতে ত্বক থাকে খুবই রুক্ষ ও শুষ্ক। বাইরের ধুলোবালি, শীতল আবহাওয়া ও আদ্র পরিবেশের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়ের ত্বক এ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তাই শীতের এই সময়টাতে আপনার ত্বক সজীব ও কোমল রাখতে দরকার একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা।

শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন

শীতকালে আমাদের ত্বকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা বেড়ে যায়। আমরা অনেকেই নানা ব্যস্ততার কারণে এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য পার্লারে যেতে পারি না। কিন্তু ঘরে বসেই মাত্র কয়েকটি উপকরণ ব্যবহারের ফলেই আমাদের ত্বকে শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করতে পারি। চলুন জেনে নেই সেই উপকরণগুলো কি কি –

অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল সাধারণ সব ত্বকের জন্য কার্যকর। এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শুধু আপনার মুখ নয়, পুরো শরীরের ত্বকের যত্ন নেই। গোসলের আগে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করে নিলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়।
দুধ ও দইঃ শুষ্ক বা ফাটা ত্বকে অনেক সময় জ্বালা পোড়া বা চুলকানির মত সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক লিটার ঠান্ডা দুধে নরম কাপড় বা তুলা ভিজিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। পাঁচ মিনিট এইভাবে ব্যবহার করলে ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর হয়। দুধ ও দই এ উপস্থিত ল্যাক্টিক এসিডের প্রভাবে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হবে।
অ্যালোভেরাঃ এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এলোভেরা জেল আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকে পড়বে সুরক্ষার আবরণ। বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে এলোভেরা ব্যবহার করা বিশেষ প্রয়োজন।
মধু ও পাকা কলাঃ মধু ও পাকা কলা একসঙ্গে ব্লেন্ডার করে প্রলেপ এর মতো করে মুখে লাগাতে হবে। তারপর 10 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর হয়ে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে নরম ও কোমল।

আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ফেসপ্যাক তৈরি করবেন 

শুষ্ক ত্বকে যে উপকরণ গুলো ব্যবহার করা উচিত নয়

শুষ্ক ত্বকের জন্য কয়েকটি উপকরণ রয়েছে যেগুলো শীতকালীন সময়ে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এই উপকরণগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা বেড়ে যায়। চলুন জেনে নিই সেই উপকরণগুলো কি কি –

বেসনঃ বেসনের সাথে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে ফেসপ্যাক, ফেস মাস্ক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই শীতের সময় আমাদের বেসন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। কারণ আমরা যখন বেসন ব্যবহার করি তখন আমাদের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়, মশ্চারাইজার কমে যায়, যার ফলে আমাদের ত্বকের শুষ্কতা আরো বেড়ে যায়। তাই শীতের সময় বেসন ব্যবহার করা উচিত নয়।
চালের গুড়াঃ এই শীতকালীন সময়ে আপনাকে চালের গুড়া ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। চালের গুড়ায় প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ রয়েছে। এই স্টার্চ আমাদের ত্বককে শুকিয়ে যেতে সাহায্য কর। চালের গুড়া ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শীতকালে চালের গুড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।
এছাড়া আলু, লেবুর, রস এসব ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। এসব উপকরণ ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে দেয়। এই কয়েকটা জিনিস যদি আপনি শীতের সময় বাদ রাখেন তাহলে খুব ভালোভাবে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়।

শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো

শুষ্ক ত্বকের জন্য Himalaya Moisturizing Aloe vera ফেসওয়াস টি খুবই ভালো। যেহেতু এটি ভিটামিন ই, অ্যালোভেরা ও শসা দিয়ে তৈরি তাই ত্বকের জন্য এই ফেসওয়াস টি খুব ভালো। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক অনেক নরম হবে এবং শুষ্কতা দূর করে। এই ফেসওয়াশ টির দাম মাত্র 120 টাকা।

শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন ক্রিম ভালো

Nivea soft Moisturizing ক্রিমটি শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো। এটি আপনার ত্বকে পর্যাপ্ত মশ্চারাইজার সরবরাহ করে আপনার ত্বককে রাখবে প্রাণবন্ত উজ্জ্বল। এই ক্রিমটি ভিটামিন ই ও জোজবা ওয়েল সমৃদ্ধ সফট ক্রিম। এই ক্রিমটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং দিনেও রাতে যে কোন সময় ব্যবহার করা যায়।

উপসংহার

শীতকালে আমাদের ত্বকের একটু বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এই সময় ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। সেইসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।